"মাগাধিরা" ভারতের মাস্টার ডিরেক্টর, এস এস রাজামৌলির আরেকটি চমৎকার কালজয়ী চলচ্চিত্র। এস এস রাজামৌলি ২০১৫ সালে "বাহুবলী" দিয়ে ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাস পাল্টে দিয়েছিলেন। ছয় বছর আগে এই "মাগধীরা" দিয়ে বিশ্বজুড়ে দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রের জনপ্রিয়তার ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। সে সময় ভারতের সনি ম্যাক্স চ্যানেলে হিন্দি ডাবিং করা ‘মাগাধিরা’ দেখে অনেক বাংলাদেশি দর্শক দক্ষিণ ভারতীয় ছবির প্রেমে পড়েছিলেন। প্রায় প্রতিদিনই চায়ের দোকানে দেখতাম মগাধীরা চলছে আর বেঞ্চে বসে তা উপভোগ করছে বহু স্রোতা । এমনকি সে সময় বাড়িতে, টেলিভিশনে মাগাধিরার রমরমা রাজত্ত্ব ছিলো।
তখনকার দিনে এত কম বাজেট উন্নত ভিএফএক্স (VFX) ছিল না যতটা আজকের যুগে আছে। রাজামৌলি মাত্র ৩৪ কোটির রুপি বাজেটে এই মাস্টারপিসটি তৈরি করেছিলেন। সত্যি কথা বলতে, আমার কাছে বাহুবলীর চেয়ে মাগাধিরার অ্যাকশন দৃশ্যগুলো বেশি অ্যানার্জিটিক আর দুর্দান্ত লেগেছে। বিশেষ করে পাহাড়ের চূড়ায় রামচরণের সঙ্গে ১০০ জন সৈন্যের লড়াইয়ের দৃশ্য দক্ষিণ ভারতীয় সিনেমার ইতিহাসে একটি কালজয়ী দৃশ্য।
মাগাধিরার নাম উঠলে প্রথমেই মাথায় আসে সেই লড়াইয়ের দৃশ্য। এছাড়া ছবিতে অনেক ছোট অ্যাকশন দৃশ্য রয়েছে যার সবকিছুই মাস্টার লেভেলের। আর ভিজ্যুয়াল ইফেক্টের কথা বললে মাত্র ৩৪ কোটি রুপি বাজেটের ছবিতে এর চেয়ে ভালো ভিজ্যুয়াল ইফেক্ট আশা করা বোকামি ছাড়া যার কিছু নয়। যারা আমার মতো সিনেমা প্রেমী তারা খুব সহজেই বুঝতে পারছেন । কিছু জায়গায় ভিএফএক্সের কাজ ছিল অবিশ্বাস্য। সিনেমাটোগ্রাফি, ক্যামেরা ওয়ার্কিং এর কাজও ছিলো চোখে পড়ার মতো।
মাগাধিরা বর্তমান সময়ের অনেক ২০০-২৫০ কোটি বাজেটের মুভিকেও টেক্কা দিতে সক্ষম হবে। রাম চরণ ছবির শুটিংয়ের আগে চার মাস থাইল্যান্ডে তলোয়ার চালানোর প্রশিক্ষণ নেন। সিনেমায় বাস্তবেই সেটা রাম চরণ করে দেখিয়েছেন। তলোয়ার নিয়ে তার কারিকুরি ছিলো যথেষ্ট ইম্প্রেসিভ। তবে ছবিটির সবচেয়ে শক্তিশালী দিক হল এর গল্প। মসলা টাইপের ছবিতে গল্পটা খুব একটা ইন্টারেস্টিং না হলেও এখানে রাজামৌলি আলাদা। এটি একটি সুন্দর গল্প প্রতিষ্ঠা করে ছবিটিকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। ভারতে পুনর্জন্মের উপর ফোকাস করে অনেকগুলি চলচ্চিত্র হয়েছে।
কিন্তু মাগাধিরার মতো এরকম এনার্জিটিক অ্যাকশন রোমান্টিক মুভিতে পুনর্জন্মকে সেট করে সহজ স্বাভাবিকভাবে গল্পটাকে এগিয়ে নিয়েছেন যা সাধারন দর্শকদের ধরতে বেগ পেতে হয়নি। মাগাধিরা হলো রাম চরনের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সিনেমা। নিজের দ্বিতীয় মুভিতেই রাজমৌলির মতো বিগ ডিরেক্টরের সাথে কাজ করার সৌভাগ্য হয়েছে রাম চরনের আর দ্বিতীয় সিনেমাতেই বাজিমাত। ৩৪ কোটি বাজেটের মাগাধিরা বক্স অফিসে তান্ডব চালিয়ে ইনকাম করেছিলো ১৫০ কোটি রূপি৷ নিজের দ্বিতীয় মুভিতেই শতকোটির মাইকফলক স্পর্শ করেছিলেন রাম চরন।
সিনেমায় ডেব্যু হবার আগে তার পরিচয় ছিলো তিনি মেগাস্টার চিরঞ্জিবীর ছেলে। আর মাগাধিরার পর বাবার পরিচয় ফেলে নিজের পরিচয়ে পরিচিতি লাভ করেন রাম চরন। গল্প নিয়ে ডিটেইলস কিছু বললাম না কারন এই সিনেমা জীবনে একবার হলেও সকলেরই দেখা। মাগাধিরা দিয়ে সাউথ ইন্ডিয়ান ফিল্মের জনপ্রিয়তার যে ভীত রাজমৌলি গড়ে দিয়েছিলেন বর্তমানে সেটা বলিউডকে টেক্কা দিয়ে গোটা ওয়ার্ল্ড ব্যাপী সাউথ ইন্ডিয়ান ফিল্মের ক্রেজ সৃষ্টি করেছে। গড়ে তুলেছে অগনিত ফ্যানবেজ। অ্যাকশন ইমোশন, রোমান্স আর কমেডিতে পরিপূর্ণ মাগাধিরা যুগের পর যুগ মুভি লাভারদের মনের পিপাসা মিটিয়ে যাবে। ছোটবেলার শৈশবে ফিরে যেতে চাইলে আরো একবার রি -ওয়াচ দিতে পারেন।
বন্ধুরা আজকের ভিডিও টি এই পর্যন্ত। রাজামৌলির কালজয়ী সিনেমা মাগাধীরা সম্পর্কে এই তথ্যভিত্তিক ভিডিও টি আপনার কেমন লেগেছে তা অবশ্যই কমেন্ড করে জানাবেন। এমন সব তথ্য ভিত্তিক ভিডিও পেয়ে আমাদের Point Of View চ্যানেলটি সাবক্রাইব করে আমাদের পাশেই থাকুন। কথা হবে পরবর্তী ভিডিওতে ততক্ষন পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি আল্লাহ হাফেজ।
0 Comments